শিশুর যত্নে ডায়াপার নিত্যদিনের ভরসা। প্রত্যেক মা-বাবাই শিশুর সুরক্ষায় ডায়াপার ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে বাচ্চারা আরামে চলাচল করতে পারে। শান্তিতে ঘুমাতে পারে। বাচ্চাদের নিয়ে নির্বিঘ্নে বাইরে ঘোরাঘুরি করা যায়। বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে করে বাচ্চাদের বারবার প্রসাব করার প্রবণতা দেখা যায়। এজন্য অধিকাংশ মা-বাবারাই বাচ্চাকে ওয়েটনেস থেকে রক্ষার তাগিদে দীর্ঘক্ষণ ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। এটি শিশুর জন্য ক্ষতিকর। নাগরিক জীবনে ডায়াপারের ব্যবহার থাকবেই। খেয়াল রাখতে হবে যেন ডায়াপারের ব্যবহার অত্যধিক না হয়ে যায়। বেশি ডায়াপার ব্যবহারে শিশুর মলমূত্র একসঙ্গে মিলে ডায়াপার র্যাশ সৃষ্টি হয়। শিশুকে ডায়াপার পরালে অবশ্যই নিয়মিত তা বদল করা দরকার। যাতে মলমূত্র ত্যাগের পর তা দীর্ঘক্ষণ শিশুর গায়ে লেগে না থাকে। বাচ্চা একবার প্রস্রাব করলেই ডায়াপার বদলে ফেলা উচিত। সারাদিন ডায়াপার পরিয়ে রাখলে কী কী অসুবিধা হতে পারে, ডায়াপার কেনার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন , ডায়াপার র্যাশ প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
বর্ষায় সারাদিন ডায়াপার পরিয়ে রাখলে কী অসুবিধা হতে পারে?
পরিবেশগত কারণে বর্ষাকালে যেহেতু শিশুর “পি” করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় । তাই এসময় বেশিরভাগ মা-বাবা লং টাইম ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। এতে করে বিপত্তি ঘটতে পারে। দীর্ঘক্ষণ ডায়াপার পরিয়ে রাখলে শিশুর কী কী অসুবিধা হতে পারে তা জেনে নেওয়া যাক
- শিশুর ত্বকে র্যাশ দেখা দিতে পারে।
- শিশুর গায়ে ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে।
- শিশুর অস্বস্তিবোধ হতে পারে।
- বার বার প্রসাব জমে ডায়াপার ভারী হয়ে যেতে পারে।
- কোমড়ের আশেপাশে দাগ হয়ে যেতে পারে।
- পা, উরুসন্ধিতে লাল দাগ দেখা দিতে পারে।

ডায়াপার র্যাশ দূর করবেন কীভাবে?
শিশুকে দীর্ঘ সময় নোংরা ডায়াপার পরিয়ে রাখলে র্যাশ ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। অনেক। কখনও আবার খাবারে অ্যালার্জিজনিত কারণে এরকম র্যাশ দেখা যায়। শিশুদের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ার কারণে র্যাশের ঝুঁকি থাকে। এ ধরনের র্যাশ দূর করতে ওষুধের পরিবর্তে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করাটা শ্রেয়। এতে শিশুর অস্বস্তিও কেটে যাবে। আসুন, হেলদিব্লিজার্ডের তথ্য অনুসারে কয়েকটা ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নিই-
১। ডায়াপারের র্যাশ দূর করতে বেকিং সোডা খুব ভালো কাজ করে। চার কাপ পানি নিন, এতে দুই টেবিল চামচ বেকিং সোডা যোগ করুন। এ মিশ্রণটি শিশুর ডায়াপার পরিবর্তন করার সময়ে আক্রান্ত স্থানে লাগাবেন।
২। র্যাশ দূর করতে নারকেল তেল ব্যবহার করুন। ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে এটি শিশুর ত্বককে রক্ষা করে।
৩। প্রতিবার ডায়াপার পরিবর্তনের সময় শিশুর ত্বকে অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। এতে ত্বকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
৪। নতুন ডায়াপার পরানোর আগে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে শিশুর ত্বক পরিষ্কার করুন।
৫। বাচ্চাদের প্রতিদিন স্নান অথবা স্পঞ্জিং করুন।
৬। গলা, ঘাড়, আন্ডারআর্মস, যৌনাঙ্গ এবং দেহের বিভিন্ন ভাঁজ ভালো করে পরিষ্কার রাখুন।
৭। স্নানের আগে তেল ম্যাসাজ করুন।
৮। গা মোছাতে পরিষ্কার নরম তোয়ালে ব্যবহার করুন।
৯। ডায়াপার পরানোর আগে পেট্রোলিয়াম জেলি বা অ্যালোভেরার জেলও ব্যবহার করা যায়।
১০। আক্রান্ত স্থানে কয়েকদিন ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করুন। এতে র্যাশের সমস্যা দূর হবে।
১২। একটানা একটা ডায়পার পরিয়ে রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে।

ডায়াপার কেনার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখা জরুরী?
ডায়পার তৈরির সময় নানা ধরনের রসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হইয়ে থাকে। এর ফলে শিশুর নরম ত্বকে এলার্জির সমস্যা দেখা দিত পারে। তাই ডায়াপার কেনার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী।
- ডায়াপার নরম ও স্কিন ফ্রেন্ডলি মেটেরিয়াল দিয়ে তৈরি কি না।
- ওয়েটনেস ইন্ডিকেটর আছে কিনা।
- শোষণ ক্ষমতা যেন ভালো হয়।
- দ্রুত শোষণ ক্ষমতা সম্পন্ন ।
- দীর্ঘক্ষণ সুরক্ষা দিবে এমন নিশ্চয়তা।
- লিক প্রুফ কিনা দেখে নিন।
- বাবল সফট শিট আছে এমন ডায়াপার ভালো কাজ করে।
- এয়ার সফট শিট বিদ্যমান।
- বাতাস চলাচল যেন করতে পারে।
- উন্নতমানের টেকনোলজির ব্যবহার ।
- এলার্জি প্রতিরোধী কিনা ।
- ভালো মানের রাবার বা ফাইবারের ব্যবহার।
উপযোগী ডায়াপার
নতুন মা-বাবা তাঁদের সন্তানের জন্য কোন ডায়াপার ব্যবহার করবেন তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন। শুরুতে সিদ্ধান্ত নিতে বেশ কিছু ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। তাছাড়া একেক বয়সের শিশুর জন্য একেক রকমের ডায়াপার। ফলে মা বাবাকে বাচ্চার বয়সের উপযোগী ভালো মানের ডায়াপার কিনতে হবে। একনজরে দেখে নিই শিশুদের জন্য ভালো মানের কিছু ডায়াপার –