বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার সহজ ৩ উপায়

তীব্র গরমে বাচ্চাদের ঘামাচি বেশি হচ্ছে। কেনো বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের বেশি হয়? দূর করার উপায় কি? বাচ্চাদের ঘামাচি হলেও তারা মুখে কিছু বলতে পারে না। তাই গরমে বাচ্চারা বেশি কান্না করে। এর অন্যতম প্রধান কারণ গরম আর ঘামাচি। কোন কোন স্থানে বেশি হয়? ট্যালকম পাউডার কি দূর করতে পারে? এসব নিয়ে চিন্তিত থাকেন অনেক বাবা মা। বাচ্চার গায়ে ঘামাচি হলে জামা কাপড় পড়ালেও বাচ্চা কান্না করে কারণ ঘামাচিতে ঘষা লাগলে জ্বালা বেড়ে যায়। এই গরমে এটি দূর করতে অনেকেই আন্দাজে বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন যা বিপদ ডেকে আনতে পারে। বাচ্চার ঘামাচি হলে তাই প্যানিক না হয়ে এটি দূর করার উপায় বের করুন। চলুন জেনে নেয়া যাক বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার সহজ ৩ উপায়।

বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের বেশি হয় কেনো?

বাচ্চাদের লোমকূপ ছোট থাকে। ধুলাবালি আর জীবাণুর সংক্রমণে সহজেই রোম ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। তাই বাচ্চাদের ঘামাচি বেশি হয়ে থাকে। বাচ্চাদের ছোট শরীরে লাল ফুসকুড়ির মতো ঘামাচি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। সাধারণত বাচ্চাদের পিঠে, পেটে, বুকে, ঘাড়ে, নিতম্ব, ও হাত-পায়ের ভাজে ঘামাচি বেশি হয়।

বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার সহজ ৩ উপায়ঃ

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে ৩টি সহজ উপায়ে ঘামাচি কমানো সম্ভব। চলুন জেনে নেয়া যাক কোন ৩টি উপায়ে দূর হবে সহজেই!

বাচ্চার শরীর ঘামমুক্ত ও শুষ্ক রাখতে হবে

১. বাচ্চার শরীর ঘামমুক্ত ও শুষ্ক রাখতে হবে

বাচ্চাদের শুইয়ে রাখলে পিঠ, ঘাড়, নিতম্বের পেছনের অংশ বেশি ঘামে। আপনার বাচ্চার শরীর ঠান্ডা ও শুষ্ক রাখবেন যেভাবে-

  • ঘেমে গেলে পোশাক বদলে দিন।
  • প্রতিদিন গোসল করান।
  • ঘেমে গেলে নরম সুতি কাপড় বা ওয়েট ওয়াইপ দিয়ে মুছে দিন।
  • দিনের বেলা দরজা ও জানালা খুলে আলো বাতাস প্রবেশ করতে দিন।
  • বাচ্চাকে ফ্যানের নিচে রাখুন। লোডশেডিং হলে চার্জার ফ্যান চালু রাখুন।
  • গোসলের পরিবর্তে বারবার নরম কাপড় ভিজিয়ে বাচ্চার শরীর মুছে দিন।
  • বাচ্চাকে গরম ও রোদ থেকে দূরে রাখুন।
  • ফলের রস, পানি, ডাবের পানি বেশি বেশি খাওয়ান।
ডায়াপার বা পোশাক পড়িয়ে রাখা থেকে বিরত থাকুন

২. ডায়াপার বা পোশাক পড়িয়ে রাখা থেকে বিরত থাকুন

বাচ্চাদের ঘামাচি হলে তারা হাত দিয়ে চুলকাতে পারে না, বলতেও পারে না কোথায় চুলকানি অনুভূত হচ্ছে। এজন্য আপনাকে সচেতন হতে হবে যাতে বাচ্চার কষ্ট না হয়। এই গরমে বাচ্চাকে ডায়াপার পড়িয়ে রাখলে ডায়াপার র‍্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাসায় ডায়াপার পড়িয়ে রাখবেন না। জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যেতে হলে অল্প সময় ডায়াপার পড়াতে পারেন। তবে বেশিক্ষণ পড়িয়ে রাখা উচিত নয়। এছাড়া বাচ্চাকে সারাক্ষণ পোশাক পড়িয়ে রাখবেন না। এতে ঘাম বেশি হয়ে শরীরে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। এছাড়াও বাচ্চাকে বাইরে যাওয়ার সময় পোশাক পড়াতে হলে ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পড়াতে হবে।

ঘামাচি দূর করার সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নিন

৩.ঘামাচি দূর করার সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নিন

বাচ্চাদের ত্বক সেনসিটিভ হয়। যেকোনো প্রোডাক্ট আন্দাজে বাচ্চার শরীরে কখনো ব্যবহার করবেন না। বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার জন্য যা যা করা উচিত-

  • ভালো ব্র্যান্ডের মাইল্ড পাউডার ব্যবহার করুন। পাউডার বাচ্চার সেনসিটিভ ত্বকে ঘামাচি কমাতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের জন্য ভালোমানের কিছু জনপ্রিয় পাউডার হলোঃ
Kodomo Baby Lotion Powder Extra Mild 0+ -180g
Kodomo Baby Lotion Powder Extra Mild 0+ -180g
  • এক টুকরো বরফ সুতি কাপড়ে পেচিয়ে হালকা করে ঘামাচির স্থানে আস্তে আস্তে বরফসেক দিতে পারেন। তবে বাচ্চার ঠান্ডার সমস্যা থাকলে বরফ না দেয়াই ভালো। 
  • বাচ্চাকে শরীরে ক্যালামাইন সিরাপ লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দিনে দুইবার লাগালে ঘামাচি চলে যাবে। 
  • বাচ্চার শরীরে যেকোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের পূর্বে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

এই গরমে বাচ্চারা দিনরাত গরমে কান্না করতে থাকে। আশা করি বাচ্চাদের ঘামাচি দূর করার এই নিয়মগুলো মেনে চললে অনেকটাই উপকৃত হবেন। ঘামাচি থেকে রক্ত বা পুজ বের হলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে ভুলবেন না।