চা কত প্রকার? চা শরীরের জন্য উপকারি নাকি ক্ষতিকর?

চা কত প্রকার? চায়ের উপকারিতা কি কি? কোন চা সবচেয়ে ভালো? চা শরীরের জন্য উপকারি নাকি ক্ষতিকর? চা কিভাবে পান করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে? কোন চায়ের উপকারিতা/গুনাগুন কি কি? চা কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? চা সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়। ঘুম দূর করার জন্য বা বন্ধুদের আড্ডায়, অফিস ডেস্ক থেকে মাথা ব্যাথার উপশমে চা আমাদের চাই-ই চাই। নির্বাচনের আলোচনা থেকে মেহমান আপ্যায়ন সবকিছুতেই চা ছাড়া চলেই না। তবে চা কি শুধুই পানীয়? নাকি চায়ের উপকারীতা আছে? কোন চায়ের গুনাগুন কি কি? কোন কোন রোগ সাড়াতে চা কার্যকরী? কেমন করে চা বানালে উপকার পাওয়া যায়? চায়ের ক্ষতিকর দিক কি কি? চা থেকে কতটুকু ক্যাফেইন পাওয়া যায়? জানতে চান নিশ্চয়ই? চলুন জেনে নেই।

চা কত প্রকার?

স্থান ও অঞ্চলভেদে চা রয়েছে বহু প্রকারের। তবে বাংলাদেশে কিছু চা খুবই জনপ্রিয়। চলুন একনজরে দেখে নেই বাংলাদেশে জনপ্রিয় চা কোনগুলোঃ

  • দুধ চা।
  • মালাই চা।
  • র চা।
  • মাসালা টি।
  • তেতুল চা।
  • আদা চা।
  • লেবু চা।
  • পুদিনা চা।
  • তুলসি চা।
  • মাল্টা চা।
  • ব্ল্যাক টি।
  • গ্রীন টি।
চায়ের উপকারীতা

চায়ের উপকারীতাঃ

  • ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  • শরীর থেকে ১৫ গুণ বেশি ইনসুলিন বের হতে সাহায্য করে।
  • শ্বাসকষ্ট ও হাপানি নিরাময়ে হার্বাল চা(তুলসী চা, পুদিনা চা, লেবু চা, মাসালা চা, ইত্যাদি) অনেক উপকারী।
  • এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যাফেইন থাকে।
  • হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • ঘুম ও ক্লান্তি দূর করে।
  • ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

কোন চা সবচেয়ে ভালো?

একেকজনের কাছে একেক চা ভালো লাগে। তবে উপকারের দিন দিয়ে গ্রীন টি সবচেয়ে এগিয়ে। গ্রীন টি ওজন কমাতে সাহায্য করে। ব্ল্যাক টি, র চা, মাসালা চা ইত্যাদি শরীরে ভালো কাজ করে। এছাড়াও বিভিন্ন হারবাল চা যেমন- তুলসী চা, পুদিনা চা, লেবু চা, ইত্যাদি সর্দি-কাশি নিরাময়ে সাহায্য করে। তেতুল চা উচ্চ রক্তচাপ কমায়। সাধারণত দুধ চা আমরা মজাদার চা হিসেবে পান করি। তবে দুধ চা তেমন উপকারী নয়। মালাই চায়ে দুধের ননী থাকে, ফলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়।

কেমন করে চা বানালে উপকার পাওয়া যায়

কেমন করে চা বানালে উপকার পাওয়া যায়?

চা বানানোর কৌশল একেকজনের একেকরকম। তবে সবচেয়ে উপকার পাওয়া যায় গরম পানিতে চায়ের পাতা বা টি ব্যাগ দিয়ে চা বানালে। চা পাতা গরম পানিতে বেশি জ্বাল করলে ট্যানিন বেশি উৎপাদন হয় যা শরীরের জন্য ভালো না। চায়ের দোকানের দুধ চা খাওয়া ভালো। কেননা চায়ের দোকানে লিকার দীর্ঘসময় জ্বাল হতে থাকে। সেই জ্বাল দেয়া লিকারে দুধ ঢেলে দিলে দুধ ট্যানিনকে আকঁড়ে ধরে। ফলে সেই ট্যানিন শরীরে মিশতে পারেনা। 

চায়ে কতটুকু ক্যাফেইন থাকে?

একেক ধরনের চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ একেক রকম। সাধারণত র চা, মাসালা চা, হারবাল চা, দুধ চা, এগুলোতে প্রায় ৪০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। চায়ের জাতভেদে এ পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। ব্ল্যাক টি তে ক্যাফেইনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে । এক কাপ ব্ল্যাক টি-তে প্রায় ৬০-৯০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। অন্যান্য চা গবেষণা করে দেখা গেছে যে এক কাপ চায়ে গড় ৪০-৭০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন পাওয়া যায়। পাতির ঘনত্ব অনুযায়ী ক্যাফেইনের পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে।

চায়ের ক্ষতিকর দিক কি কি?

  • ঘুমের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
  • হজমে সমস্যা হতে পারে।
  • গ্যাস্ট্রিক বেড়ে যেতে পারে।
  • কোষ্টকাঠিন্য হতে পারে।
  • গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ভ্রূণের বিকাশে বাধা ঘটতে পারে। এমনকি গর্ভপাত হতে পারে। তাই গর্ভকালীন অবস্থায় চা থেকে বিরত থাকাই ভালো।

গরমে পড়ন্ত বিকেল হোক বা এক পশলা বৃষ্টি, চা ছাড়া বাঙালির চলেই না। চা যেনো জীবনের অংশ হয়ে গেছে। ঘরোয়া আড্ডা থেকে বিশাল সেমিনার, অলস বিকেল কিংবা ক্লান্ত সন্ধ্যা, চায়ের আবেশে মিশে আছে এক অন্যরকম আবেগ।